রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
করোনায় হতাহতের খবর রাখা স্থানীয় একটি সংস্থার হিসেবে জানা যায়, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কমপক্ষে ১২ জন এবং করোনার উপসর্গ নিয়ে আরো ৯ জন সাংবাদিক মারা গেছেন। কারণ হিসেবে জানা যায়, সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব। চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিতদের তুলনায় সংখ্যাটা অনেক কম, কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য প্রায় সব দেশের চেয়ে যে বাংলাদেশে সাংবাদিকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সেটা বলাই যায়। –সাউথ এশিয়ান মনিটর
জেনেভাভিত্তিক প্রেস ‘এম্বলেম ক্যাম্পেইন’ এর মতে, বিশ্বজুড়ে করোনাকালে মোট ১৮৬ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন পেরুতে, ৩৭ জন। এরপর ব্রাজিলে ১৬ জন। সংস্থাটি অবশ্য নিশ্চিত মৃত্যুর সংখ্যাটাই হিসাবে রেখেছে। করোনাযুদ্ধে ফ্রন্টলাইনার যোদ্ধা হিসেবে কাজ করেও সুরক্ষা সরঞ্জাম না পাওয়াকে মৃত্যুর কারণ বলে দায়ী করেছেন অনেক সাংবাদিক।
ঢাকা ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘আওয়ার মিডিয়া, আওয়ার রাইটস’ এর মতে বাংলাদেশে ৫৫৫ জন সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বাংলাদেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১,৭২,০০০ জন মানুষ এবং মারা গেছেন ২০০০ জন। কিন্তু টেস্টের সংখ্যা কম হবার কারণে মনে করা হচ্ছে, প্রত্যেকটি হিসাবেই প্রকৃত সংখ্যা হয়তো আরো অনেক বাড়বে।
৪৭ বছর বয়সী সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর খোকন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি ছিলেন পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা রিনা এবং পুত্রও আক্রান্ত হয়েছিলেন। রিনা বলছিলেন, যাদের কেউ মারা যায় তারাই বুঝে এর যন্ত্রণা কেমন। আমরা নিজেরাও আক্রান্ত ছিলাম বলে তার লাশটা ‘শেষ দেখা’ও দেখতে পারিনি। বাসা ভাড়া, খাওয়াদাওয়া, পরিবারের খরচ সব মিলিয়ে চিন্তায় আছে। কয়েকজন বলেছেন পাশে থাকবেন কিন্তু সেটা যথেষ্ট না। আমি ‘সিস্টেম’ কেই দোষ দিচ্ছি এবং সাংবাদিকদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা না থাকাকে।
তারও আগে গত ৩০ মার্চ মধ্যরাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মারা যান বাংলাদেশি ফটো সাংবাদিক আবদুল হাই স্বপন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুবরণকারী স্বপন মানবজমিনে কাজ করতেন। তার স্ত্রীসহ পরিবার থাকেন ঢাকায়। তার স্ত্রী লুৎফুন্নাহার জানান, পরিবারের কর্তা মারা গেলে পরিবারটির কি অবস্থা হয়, সেটি বলে বুঝাতে পারব না। তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাংবাদিক হিসেবে সর্বপ্রথম আমার স্বামী মারা গেলেও কোনোধরনের সরকারি বা বেসরকারি আর্থিক সহায়তা আমাদের পরিবার এখনো পায়নি।